মৌসুমি ফলের যে সকল উপকারিতা

মৌসুমি ফলের যে সকল উপকারিতা

এখন গ্রীষ্মকাল। আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে ফল পাওয়া যায়, বিশেষ করে আম, জাম, কাঁঠাল ও লিচু। এ সকল ফলগুলো প্রচুর পরিমাণে আমাদের দেশের আনাচে কানাচে প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। এই সকল ফলগুলো শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই ফলগুলো সুক্রোজ, গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ এর উৎস অর্থাৎ পানি, খাদ্য-আঁশ ও প্রাকৃতিক চিনিরও উৎস। তার মানে এই ফলগুলো পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাজেই এই করোনা সংক্রমণের সময় আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু মৌসুমি ফল অবশ্যই রাখতে হবে। এখন জেনে নেই এসময়ের কোন ফলের উপকারিতা কতটুকু।

 

  • আম

এই সময়ে আম খুব সহজেই আমরা পেয়ে থাকি। আম ভালো খায় না এমন লোক খুব কমই রয়েছে। কাঁচা ও পাকা আম উভয়েই আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

আমে বিদ্যমান ক্যারোটিনয়েড গুলো কোলন ও ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

আবার বয়স জনিত চোখের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

আমে রয়েছে পটাশিয়াম, খাদ্য-আঁশ ও এন্টি-অক্সিডেন্ট যা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

অন্যদিকে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে পেকটিন।

ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা ও একদিন পরপর দৈনিক শর্করার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আম খেতে পারেন।

 

  • কাঁঠাল

এটা ধারণা করা হয় যে পৃথিবীর সবচেয়ে রসালো ও সুমিষ্ট ফল হচ্ছে কাঁঠাল। ক্যারোটিন সমৃদ্ধ এই ফলে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম।

ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিনের উৎস এই কাঁঠাল।

তাছাড়াও কাঁঠালের বীজ কাঁচা কাঁঠালের যথেষ্ট প্রোটিন, ক্যালরি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক এসিড, ভিটামিন ও খাদ্য।

অন্যদিকে কাঁঠালের ফাইটোকেমিক্যালস গুলো ফ্রি-রেডিকেল দূর করে কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

এছাড়া এর ভিটামিন সি সর্দি-কাশি প্রতিহত করে খাদ্য আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

 

  • লিচু

একটি রসালো ফল লিচু। লিচুতে রয়েছে শর্করা, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি ও প্রোটিন।

এছাড়া এই ফলে বিদ্যমান কপার আয়রন ফোলেট লোহিত কণিকা তৈরিতে, ভিটামিন গুলো বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে, ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

লিচুর খাদ্য আঁশ ও এন্টি-অক্সিডেন্ট প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

এই সময়ে এই ফল বেশি হয়ে থাকে বলে এটি খুবই সহজলভ্য। তাই প্রতিদিন আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণে লিচু খাওয়া উচিত।

 

  • জাম

এই গ্রীষ্মের দিনে জামাও কিন্তু প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে এই জামের প্রচুর ফলন হয়ে থাকে।

কালোজাম হূদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, এন্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি-রেডিক্যাল কমিয়ে ত্বককে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করে।

জামের খনিজ লবণ হারকে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করে।

শর্করা কম থাকায় এবং খাদ্য আঁশ এর উপস্থিতির কারনে কালোজাম খাওয়ার পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

এই কারণেই ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন খেতে পারেন। তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী।

 

পরিশেষে বলা যায় উল্লিখিত ফলগুলো দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় উক্ত মৌসুমি ফলহুলো রাখা অত্যন্ত জরুরী।

Comments